মনতাজুর রহমান আকবর হলেন একজন বাংলাদেশী চলচ্চিত্র পরিচালক, চিত্রনাট্যকার, প্রযোজক, সমাজকর্মী ও একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা।
মনতাজুর রহমান আকবর তার গ্রামের বাড়ি জয়পুরহাট জেলার আক্কেলপুর। উনিশশো সাতান্ন সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ একত্রিশ জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
মনতাজুর রহমান আকবর বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে পানিখনি শিলিগুড়িতে প্রশিক্ষণ নেন।
তিনি সেক্টর কমান্ডার কাজী নূরুজ্জামান এর অধীনে উনিশশো একাত্তর সালে সাত নম্বর সেক্টরে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে তার গ্রুপ কমান্ডার ছিলো সাইদুর রহমান।
আকবর ছোটবেলা থেকেই পড়াশুনার পাশাপাশি বাবার ব্যবসার জন্য বিভিন্ন এলকায় যেতেন। বাবার ব্যবসায় দেখার পাশাপাশি কলেজের থিয়েটারের সাথে যুক্ত ছিলেন।
কলেজে পড়াকালীন থিয়েটার পরিচালনা করতেন সারা বছর ধরে। বেশ কিছু থিয়েটার এর অন্যতম সংগঠক হিসাবে কাজ করেন।
তিনি উনিশশো সাতাত্তর সালে রাজশাহী এডুকেশন বোর্ড এর অধীনে জয়পুরহাট ডিগ্রী কলেজ থেকে বি.এ.পাস করেন।
মনতাজুর রহমান আকবর উনিশশো তেহাত্তর থেকে উনিশশো আটাত্তর সাল পর্যন্ত বিভিন্ন মঞ্চদলের নাটকে নির্দেশনা দেন।
কলেজ জীবনের এই সময়ে মঞ্চ নাট্য পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। তিনি এসময় আক্কেলপুর আদর্শ ক্লাব, আক্কেলপুর এমআর কলেজ ক্লাব, চান্তারা ক্লাবের হয়ে অনেকগুলো নাটক পরিচালনা করেন।
যেগুলো মধ্যে মালার প্রেম, নবাব সিরাজ-উদ-দৌলা ছিলো অন্যতম।
আকবর সহকারী পরিচালক হিসাবে তার কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি উনিশশো আশি সালে পরিচালক আজিজুর রহমানের সহকারী হিসেবে ছুটির ঘণ্টা চলচ্চিত্রে প্রথম কাজ করেন।
আকবর উনিশশো একানব্বই সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ন্যায় যুদ্ধ পরিচালনার মাধ্যমে তার পরিচালক হিসাবে অভিষেক ঘটে, এতে প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেন ইলিয়াস কাঞ্চন ও সুচরিতা।
যদিও আকবর পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র টাকার পাহাড়, যা উনিশশো তিরানব্বই সালে মুক্তি পেয়েছিল।
পরের বছর জনপ্রিয় জুটি ইলিয়াস কাঞ্চন ও দিতিকে নিয়ে নির্মাণ করেন “চাকর”।
ষাট লাখ টাকা বাজেটের ছবিটি সেই সময় দুই কোটি টাকা আয় করে উনিশশো বিরানব্বই সালের টপ চার্টে উঠে আসে।
তিনি মারপিট ও প্রণয়ধর্মী চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য পরিচিত।তিনি মান্নার সঙ্গে বাইশটি, ডিপজলের সাথে একুশটি এবং আব্দুল্লাহ জহির বাবুর সঙ্গে ছেচল্লিশটি চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন।
এছাড়াও তার চলচ্চিত্রের মাধ্যমে ডিপজল, সাদিকা পারভিন পপি, কেয়া, রিয়া সেন, শাকিবা, সংগীতা, অন্তরা বিশ্বাস, আকাশ খান এবং পুষ্পিতা পপির মতো অভিনেতাদের চলচ্চিত্রে আবির্ভাব ঘটে।
দুই হাজার নয় সালে ” কাজের মানুষ” চলচ্চিত্রের জন্য সেরা পরিচালক হিসেবে তিনি অর্জন করেন “জনতার নিঃস্বার্থ পারসোনালিটি অ্যাওয়ার্ড”।
আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি জন্মদিনের অনেক অনেক ভালোবাসা এবং শুভেচ্ছা।
তারিখঃ- ৩১/৭/২০২১ ইং