প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও নাট্যকার ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ ও নাট্যকার হচ্ছেন ক্ষীরোদপ্রসাদ বিদ্যাবিনোদ । তিনি পৌরাণিক, ঐতিহাসিক, অপেরা এবং প্রহসনধর্মী নাটক রচনা করেছেন।তাঁর রচিত গ্রন্থের সংখ্যা আটান্নটি। আঠারোশো নিরানব্বই সালে বভ্রুবাহন নাটক লিখে তিনি ‘বিদ্যাবিনোদ’ উপাধি লাভ করেন।

পশ্চিমবঙ্গের চবিবশ পরগনা জেলার খড়দহে আঠারোশো তেষট্টি সালের বারোই এপ্রিল তিনি জন্মগ্রহণ করেন।

ছোটবেলা থেকেই ক্ষীরোদপ্রসাদ সাহিত্যের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। মাত্র বাইশ বছর বয়সে তাঁর রাজনৈতিক সন্ন্যাসী নামক একটি আখ্যায়িকা দু খন্ডে প্রকাশিত হয়। পরবর্তীকালে নাট্যজগতের প্রতি আকর্ষণবশত অধ্যাপনাবৃত্তি ত্যাগ করে তিনি নাটক রচনায় আত্মনিয়োগ করেন।

তাঁর রঘুবীর একটি সফল রোমান্টিক নাটক এবং আলীবাবা ও কিন্নরী দুটি জনপ্রিয় গীতিনাট্য। এর মধ্যে আলিবাবা প্রথম মঞ্চসফল নাটক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে।

ক্ষীরোদপ্রসাদ গদ্য ও অমিত্রাক্ষর ছন্দ উভয় রীতিতেই নাটক রচনা করেন। অমিত্রাক্ষর ছন্দে রচিত ফুলশয্যা নামক প্রথম কাব্যনাটকে তাঁর উচ্চ কবিত্বশক্তির প্রকাশ ঘটে এবং নাটকটি সুধীমহলে বিশেষভাবে প্রশংসিত হয়।

তাঁর ঐতিহাসিক নাটকগুলির মধ্যে বঙ্গের প্রতাপাদিত্য, পলাশীর প্রায়শ্চিত্ত, নন্দকুমার, আলমগীর ইত্যাদি সমকালে দেশাত্মবোধ উদ্বোধনে সহায়তা করেছিল।

তাঁর এরূপ দুটি নাটক প্রায়শ্চিত্ত ও নন্দকুমার ব্রিটিশ সরকার বাজেয়াপ্ত করে।

ক্ষীরোদপ্রসাদের পৌরাণিক নাটকগুলির মধ্যে ভীষ্ম ও নরনারায়ণ দীর্ঘদিন রঙ্গমঞ্চে অভিনীত হয়। নাটকের অন্তর্নিহিত যে দ্বন্দ্ব নাটককে সার্থক করে তোলে তা চমৎকারভাবে ক্ষীরোদপ্রসাদের নাট্যকর্মে ফুটে উঠেছে।

মঞ্চে উপবিষ্ট দর্শকদের মনোরঞ্জনের জন্য ক্ষীরোদপ্রসাদ সুন্দর গান রচনা করতে পারতেন। নাটক ছাড়াও তিনি কয়েকটি উপন্যাস ও ছোটগল্প রচনা করেন এবং ভগবদ্গীতার বঙ্গানুবাদ করেন।

উনিশশো সাতাশ সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ চৌঠা জুলাই পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়ায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে তার মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।

তাংঃ- ৪/৭/২০২১ ইং

Facebook Comments