মা কথাটি ছোট্ট অতি,
কিন্তু জেনো ভাই,
ইহার চেয়ে নামটি মধুর
তিন ভূবনে নাই।
(কবিতা-মা)
অথবা,
বাদশাহ আলমগীর-
কুমারে তাঁহার পড়াইত এক মৌলভী দিল্লীর।
একদা প্রভাতে গিয়া
দেখেন বাদশাহ- শাহজাদা এক পাত্র হস্তে নিয়া।
(কবিতা-শিক্ষাগুরুর মর্যাদা)
এই রকম অজস্র জনপ্রিয় কবিতার রচয়িতা ছিলেন কবি কাজী কাদের নেওয়াজ। সাহিত্যামোদী পরিবেশে বেড়ে উঠেছিলেন তিনি। অল্প বয়সেই সাহিত্যের প্রতি আকৃষ্ট হন।সাহিত্যের প্রায় সকল শাখাতেই তার বিচরণ ছিল।
তবে কবিতাই ছিল তার চর্চার প্রধান ক্ষেত্র। তিনি রবীন্দ্র ভাববলয়ের কবি হলেও আঙ্গিকে, বিন্যাসে, বিষয়ে ও প্রকাশনৈপুণ্যে তার কাব্যগুলো স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল হয়ে রয়েছে।
কবিতায় তিনি সত্য, সুন্দর আর সুনীতিকে আহ্বান করেছেন। ‘ছান্দসিক কবি’ হিসেবে তিনি অধিক পরিচিত ছিলেন। প্রেম, প্রকৃতি ও স্বদেশ তার কবিতার বিষয়বস্তু। সহজ-সরল ভাবমাধুর্যে রচিত তার কাহিনীধর্মী ও নীতিকথামূলক শিশুতোষ রচনার সংখ্যা অনেক।
সাহিত্যচর্চার ধারাকে স্বতন্ত্র মর্যাদায় সুসংগঠিত রূপ দেয়ার ক্ষেত্রে তার অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রেম ও প্রকৃতি তার কবিতায় মনোজ্ঞভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান এই কবি উনিশশো নয় সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ পনেরোই জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেন সকলের প্রিয় কবি।
ব্যাক্তিগত জীবনে একজন শিক্ষক হিসেবেও ছাত্রদের প্রতি তিনি ছিলেন স্নেহপ্রবণ ও আদর্শপ্রাণ। বাংলা, ইংরেজি, সংস্কৃত আরবী, ফারসী প্রতিটি ভাষাতেই তাঁর ছিল পান্ডিত্য।
উনিশশো তিরাশী সালের তেসরা জানুয়ারী কবি মৃত্যুবরণ করেন।আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন এর সকল স্তরের সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে কবিকে জানাই অজস্র ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।
তারিখঃ- ১৫/১/২০২১ ইং।