জগদীশ গুপ্ত একজন বিশিষ্ট ঔপন্যাসিক এবং ছোটগল্পকার ছিলেন। তিনি মূলত কথাসাহিত্যিক হলেও সাহিত্যিক জীবনের শুরুতে কবিতা লিখেছেন ও একটি কবিতা সংকলন প্রকাশ করেছেন।
ফরিদপুর জেলার অন্তর্গত মেঘচারমি গ্রাম হচ্ছে তার পৈতৃকনিবাস। আঠারোশো ছিয়াশি সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ পাঁচই জুলাই তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তার পিতা কৈলাশচন্দ্র গুপ্ত কুষ্টিয়া আদালতের বিশিষ্ট আইনজীবী ছিলেন।
উনিশশো সাতাশ সালে জগদীশ গুপ্তবোলপুরের চৌকি আদালতে টাইপিস্টের চাকুরীতে যোগদান করেন। সেখানে একটানা সতেরো বছর চাকুরীর করার পর উনিশশো চুয়াল্লিশ সালে অবসর গ্রহণ করেন।
এরপর কুষ্টিয়ায় বাস করতে থাকেন।উনিশশো সাতচল্লিশ সালে দেশবিভাগের পর কুষ্টিয়া ত্যাগ করে কলকাতায় গমন করেন ও সেখানেই স্থায়ীভাবে বসবাস করেন।
কবি হিসেবে তিনি প্রথমে আত্মপ্রকাশ করলেও ছোট গল্পকার রূপে বাংলা সাহিত্যে স্থায়ী আসন লাভ করেন। বিজলী, কালিকলম, কল্লোল প্রভৃতি সেকালের নূতন ধরনের সকল পত্রিকাতেই গল্প প্রকাশ করেছেন।
গল্প ও উপন্যাসের ক্ষেত্রে প্রকাশভঙ্গির স্বাতন্ত্র্যের জন্য সাহিত্যিক মহলে বিশিষ্ট স্থান পেয়েছিলেন।
ছোটগল্পের বিশিষ্ট শিল্পী ছিলেন জগদীশ গুপ্ত।
গভীর জীবনবোধ, সুঠাম কাহিনীবিন্যাস ও চরিত্রচিত্রণের নৈপুণ্যে তাঁর ছোটগল্প সমৃদ্ধ হয়েছে। মনোবৈকল্য ও মনোবিশ্লেষণ এবং দুঃখময়তার নিপুণ বর্ণনায় তাঁর শিল্পকর্ম এক অসাধারণ সৃষ্টি হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
সামাজিক অন্যায়-অবিচারের চেয়ে অদৃষ্টলিপিই দুঃখময়তার কারণ বলে তাঁর গল্পে বিশ্লেষিত।
তার রচিত উল্লেখযোগ্য গল্পগ্রন্থের মধ্যে রয়েছে
বিনোদিনী, রূপের বাহিরে, শ্রীমতি, উদয়লেখা, শশাঙ্ক কবিরাজের স্ত্রী, মেঘাবৃত অশনি, স্বনির্বাচিত গল্প প্রভৃতি।
উল্লেখযোগ্য উপন্যাসসমূহের মধ্যে রয়েছে
অসাধু সিদ্ধার্থ, লঘুগুরু, দুলালের দোলা, নিষেধের পটভূমিকায়, কলঙ্কিত তীর্থ প্রভৃতি।
এছাড়াও অক্ষরা নামে তার একটি কবিতা সঙ্কলনও রয়েছে।
উনিশশো সাতান্ন সালের পনেরোই এপ্রিল তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তাংঃ- ৫/৭/২০২১ ইং।