প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের মৃত্যুতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের শোক প্রকাশ

 

বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত সংগীতশিল্পী ছিলেন ফকির আলমগীর। গণসংগীত ও দেশীয় পপসংগীতে তার রয়েছে ব্যাপক অবদান।

উনিশশো পঞ্চাশ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় দিনটিতে ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা থানার কালামৃধা গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন।
জগন্নাথ কলেজ থেকে স্নাতক পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন।

ফকির আলমগীর ষাটের দশক থেকে সংগীতচর্চা করেছেন। গান গাওয়ার পাশাপাশি বাঁশীবাদক হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। বাংলাদেশের সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে তিনি তাঁর গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন।

ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠী ও গণশিল্পীগোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ষাটের দশকে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামে এবং উনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে গণসংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন।

গণঅভ্যুথান, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বই এর সামরিক শাসনবিরোধী গণআন্দোলনে তিনি শামিল হয়েছিলেন তাঁর গান দিয়ে।

যুদ্ধের অভিজ্ঞতা থেকে সঞ্চিত যন্ত্রণাকে প্রকাশ করার জন্যই দেশজ সংগীতের সঙ্গে পাশ্চাত্য সুরের মেলবন্ধন ঘটিয়ে তিনি ও তাঁর সময়ের কয়েকজন শিল্পী শুরু করেছিলেন প্রথম বাংলা পপ ধারার গান। বাংলা পপ গানের বিকাশেও তাঁর রয়েছে বিশেষ অবদান।

দীর্ঘ ক্যারিয়ারে তাঁর গাওয়া সান্তাহার জংশনে দেখা, বনমালী তুমি, কালো কালো মানুষের দেশে, মায়ের একধার দুধের দাম, আহারে কাল্লু মাতব্বর, ও জুলেখা সহ বেশ কিছু গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। এর মধ্যে ও সখিনা গানটি এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে।

উনিশশো নিরানব্বই সালে একুশে পদক অর্জন করেছিলেন ফকির আলমগীর। এছাড়াও তিনি পেয়েছেন দেশী বিদেশি অসংখ্য সম্মাননা ও পদক।

একাত্তর বছর বয়সে আজ তেইশে জুলাই দুইহাজার একুশ সালে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে তার প্রতি জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা।

তারিখঃ- ২৩/৭/২০২১ ইং।

Facebook Comments