থিয়েটারকে উপলব্ধি করার উপায়ে যিনি পরিবর্তন এনেছিলেন নাট্য কৌশলগুলির সুনিপুণ ব্যবহারের মাধ্যমে তিনি ছিলেন ভারতীয় জন নাট্য মঞ্চ বা জনমের আহবায়ক সফদার হাশমি।
নাট্য পরিবেশনাগুলি কেবলমাত্র অভিজাত শ্রেণির কাছেই নয় বরং সাধারণ মানুষের কাছেও উপলব্ধ করে তুলতে ভূমিকা পালন করে গেছেন সফদার হাশমি।
উনিশশো চুয়াল্লিশ সালের বারোই এপ্রিল তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন। মাত্র পঁয়ত্রিশ বছরে তাঁর মৃত্যুর হলেও, তার আগে বিভিন্ন ধরনের মানুষের কথা জানাতে চব্বিশটি পথনাটিকা প্রায় চার হাজার বার শো করেছিলেন। পথে নাটক করতে গিয়ে নিহত হওয়া নাট্যব্যক্তিত্ব সফদার হাশমি।
মার্ক্সীয় ভাবনায় উদ্দীপিত নাট্যব্যক্তিত্ব সফদার হাশমি’র প্রয়াণবার্ষিকী আজ।
উনিশশো উননব্বই সালের পহেলা জানুয়ারি “হল্লাবোল” পথ নাটকটি অভিনয় করছিলেন ভারতের রাজধানী দিল্লির অদূরে ঝান্ডারপুরের শাহিবাবাদ অঞ্চলে। সেখানে অতর্কিতে সেই নাটককে বাধা দিতে কিছু স্বার্থান্বেষী মহল তাঁদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছিল৷ সেই আক্রমণে গুরুতর আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরের দিন দোসরা জানুয়ারি তাঁর মৃত্যু হয়।
তবে তাঁর মৃত্যুতে থেমে থাকেনি তাদের নাট্য আন্দোলন বরং আরও জোরে প্রতিবাদের জন্য গর্জে উঠেছিল সফদারের সঙ্গীরা৷ ফলে দোসরা জানুয়ারিতে তাঁর মৃত্যু হলেও ঠিক দুদিন পরেই চৌঠা জানুয়ারি ওই একই স্থানে তাঁর স্ত্রী মলয়শ্রী হাসমি আবার ‘হল্লাবোল’ এর অভিনয় করেন। সেদিন যেন শোক নয়, ক্রোধের আগুনে জ্বলে উঠেছিল গোটা এলাকা। নাটকে যুক্ত সফদার হাশমির অনুগামীদের দুঃসাহস আর প্রতিজ্ঞার কাছে পিছু হটেছিল স্বার্থান্বেষী মহলের ষড়যন্ত্র।
ওই ঘটনার পর থেকে তিনি বামমনস্ক সংস্কৃতি জগতের প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিলেন৷ তিনি চলে গেলেও থেমে থাকেনি জনমের অর্থাৎ জন নাট্য মঞ্চের কার্যকলাপ৷
আক্রান্ত হবার সেই সময়ও তিনি তার সহকর্মীদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার পরে সুরক্ষার জন্য সর্বশেষে দৌড়েছিলেন আত্নরক্ষার্থে।
এমন ত্যাগী একজন সাংস্কৃতিক কর্মীর মৃত্যুবার্ষিকীর এই দিনে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন সকল স্তরের সদস্য, দায়িত্বশীল, শুভাকাঙ্ক্ষী, বন্ধুদের পক্ষ থেকে তার প্রতি জানাচ্ছি অজস্র ভালোবাসা এবং শ্রদ্ধা।।
তারিখঃ- ২/১/২০২১ ইং।