গিরিশচন্দ্র ঘোষ ছিলেন একজন বিশিষ্ট বাঙালি সংগীতস্রষ্টা, কবি, নাট্যকার, ঔপন্যাসিক, নাট্যপরিচালক ও নট। বাংলা থিয়েটারের স্বর্ণযুগ মূলত তারই অবদান।
আঠারোশো বাহাত্তর সালে তিনিই প্রথম বাংলা পেশাদার নাট্য কোম্পানি ন্যাশানাল থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন। গিরিশচন্দ্র প্রায় চল্লিশটি নাটক রচনা করেছেন এবং ততোধিক সংখ্যক নাটক পরিচালনা করেছেন। জীবনের পরবর্তী ভাগে তিনি রামকৃষ্ণ পরমহংসের এক বিশিষ্ট শিষ্য হয়েছিলেন।
আঠারোশো চুয়াল্লিশ সালের আঠাশে ফেব্রুয়ারী কলকাতার বাগবাজারে গিরিশচন্দ্রের জন্ম। তিনি ছিলেন তার পিতামাতার অষ্টম সন্তান।
আঠারোশো সাতষট্টি সালে শর্মিষ্ঠা নাটকের গীতিকার হিসাবে নাট্যজগৎতে প্রথম যুক্ত। দু’বছর পরে সধবার একাদশিতে অভিনয় করে বেশ সুনাম অর্জন করে ছিলেন।
কাজী নজরুল ইসলাম গিরিশচন্দ্রের ভক্ত ধ্রুব উপন্যাসটি চলচ্চিত্রায়িত করেন। উনিশশো ছাপান্ন সালে মধু বসুর পরিচালনায় গিরিশচন্দ্রের অবলম্বনে নির্মিত মহাকবি গিরিশচন্দ্র চলচ্চিত্রটি মুক্তি পায়।
তিনি অনেক নাটক রচনা করেন। তার উল্লেখযোগ্য পৌরানিক নাটকগুলোর মধ্যে রয়েছে রাবণবধ, সীতার বনবাস, লক্ষ্ণণ বর্জন, সীতাহরণ, পান্ডবের অজ্ঞাতবাস, জনা প্রভৃতি।
চরিত্র নাটকের মধ্যে রয়েছে চৈতন্যলীলা, বিল্বমঙ্গল ঠাকুর, শঙ্করাচার্য।
রোমান্টিক নাটকের মধ্যে রয়েছে মুকুলমুঞ্জরা, আবু হোসেন।
সামাজিক নাটকের মধ্যে রয়েছে প্রফুল্ল, মায়াবসান, বলিদান।
ঐতিহাসিক নাটকের মধ্যে রয়েছে সিরাজদ্দৌলা, মীর কাসিম, ছত্রপতি শিবাজী।
আঠারোশো সাতাত্তর সালে মেঘনাদবধ কাব্যে রামচন্দ্র ও মেঘনাদ উভয় ক্ষেত্রে অভিনয় জন্য সাধারণী পত্রিকার সম্পাদক অক্ষয়চন্দ্র সরকার তাকে ‘বঙ্গের গ্যারিক’ আখ্যায় ভূষিত করেন।
উনিশশো বারো সালের আট ফেব্রুয়ারি এই মহান অভিনেতা ও নাট্যকার কলকাতায় পরলোক গমন করেন।
আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তারিখঃ- ২৮/২/২০২১ ইং।