রশিদ হোসেন চৌধুরী, যিনি রশিদ চৌধুরী নামে পরিচিত ছিলেন বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী, ভাস্কর, লেখক এবং অধ্যাপক। বাংলাদেশে শিল্পচর্চার ক্ষেত্রে জয়নুল আবেদীন প্রবর্তিত উত্তর উপনিবেশিক পর্বে সৃজনশীল ও মৌলিকত্বে তিনি ছিলেন সর্বজন প্রশংসিত ব্যক্তিত্ব।
তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রজন্মের শিল্পীদের মধ্যেও অন্যতম এবং পঞ্চাশের দশকে বাংলাদেশের আধুনিক শিল্প আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ হিসেবে স্বকীয় শিল্পচর্চার সূচনা করেছিলেন।
রশিদ হোসেন চৌধুরী উনিশশো বত্রিশ সালের পহেলা এপ্রিল ফরিদপুর জেলার (বর্তমানে রাজবাড়ি) রতনদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একেবারে শেষ পর্যায়ে চৌদ্দই ডিসেম্বর উনিশশো একাত্তর সালে পাকিস্তানি সেনাবাহিনি অনেক বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।
পরবর্তীকালে এই সকল বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্মাণ করা হয় বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভ। এর নকশা প্রণয়ন করেছিলেন রশিদ চৌধুরী।
স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ কাজ শেষ হয় উনিশশো পঁচাশি সালে। কেরন গাছে পরিবেষ্টিত স্মৃতিস্তম্ভ চত্বরে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সৃজনশীল কর্মকাণ্ড এবং উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে।
উনিশশো সত্তর এর দশকে রশিদ অনেকটা রং তুলি ছেড়ে ব্যক্তিগত ডায়েরিতে নানা ধরনের লেখার মধ্য দিয়ে শুরু করেন সাহিত্যচর্চা। লিখেছেন কবিতা, মূল ফরাসি থেকে ভাষান্তরিত করেছেন জাক প্রেভের এবং রবের দেস্নোস এর রচনা।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে তার সম্মানার্থে শিল্পী রশিদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এটি চট্টগ্রাম শহরের সর্বপ্রথম আর্ট গ্যালারি। এটি একটি ত্রিতল বিশিষ্ট প্রদর্শনী ভবন।
এখানে প্রতিনিয়ত বিভিন্ন প্রবীন নবীন শিল্পীদের চিত্রপ্রদর্শনীর আয়োজিত হয়ে থাকে। এছাড়াও বিশ্ববিদ্যলয়ের চারুকলা শিক্ষার্থীদের নিয়মিত অনিয়মিত এবং বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী এখানে আয়োজিত হয়ে থাকে।
চুয়ান্ন বছর বয়সে উনিশশো ছিয়াশি সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ বারোই ডিসেম্বর
ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা জানাচ্ছি।
তারিখঃ- ১২/১২/২০২১ ইং।