বিশিষ্ট সাহিত্যিক তপোবিজয় ঘোষের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

তপোবিজয় ঘোষ বিংশ শতকের শেষার্ধের বাংলার বিশিষ্ট সাহিত্যিক।

বাংলাদেশের ময়মনসিংহে উনিশশো ছত্রিশ সালে তপোবিজয় ঘোষ জন্মগ্রহণ করেন। তবে উনিশশো সাতচল্লিশ খ্রিস্টাব্দে দেশবিভাগের পর সপরিবারে তারা ভারতে চলে আসেন এবং পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার সিউড়িতে বসবাস শুরু করেন।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম.এ পাশ করেন। পরে সাহিত্যে গবেষণা করে ডক্টরেট হন। তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘ঊনিশ শতকের নীল আন্দোলন ও বাংলার সারস্বত সমাজ’।

কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রধান হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।শেষে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়েও অস্থায়ী ভাবে অধাপনা করেছেন।

অধ্যাপনার সাথে সাহিত্যচর্চা চলতে থাকলেও ছোটগল্প দিয়ে নিয়মিত লেখালেখি শুরু করেন পাঁচের দশকের মাঝামাঝি সময়ে। তাঁর সে সময়ের অজস্র লেখা গল্প স্বাধীনতা, পরিচয়, নন্দন, চতুষ্কোন সত্যযুগ, মাসিক বাংলাদেশ প্রভৃতি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।

তাঁর লেখানএখন প্রেম, সামনে লড়াই ইত্যাদি উপন্যাস নকশাল আন্দোলনের পটভূমিতেই রচিত হয়েছে এবং বেশ কয়েকটি ভাষাতেও অনূদিত হয়েছে। দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশ ও পরিস্থিতিতেও কলম ধরেছেন।
গণতন্ত্র কে বাবু গল্পটিতে সুন্দরভাবে সমকালীন উপযুক্ত প্রশ্ন উপস্থাপিত হয়েছে। পারিবারিক ও অর্থনৈতিক কারণে ছয়ের দশকের কিছুদিন তাঁর লেখা অবশ্য বন্ধ ছিল।

ঘুমন্ত মনকে জাগ্রত করা এবং জাগ্রত মনকে সক্রিয় করে তোলা সাহিত্যিকের লক্ষ্য । সাহিত্যিক হিসেবে তপোবিজয় বাবু এই ঘুমন্ত মন জাগ্রত করা ও জাগ্রত মনকে সক্রিয় করার কাজটা বেশ পটুতার সাথে করেছেন ।

সবথেকে ভালো লাগার ব্যাপার হল সমাজের প্রতিটি বিশিষ্ট ঘটনা তাঁর মনে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং সেই আলোড়িত চিন্তা ওনার লেখার উপরেও ছাপ ফেলেছে। প্রত্যেক সাহিত্যিক যেমন সমাজ দ্বারা প্রভাবিত হন বিপরীতে সমাজও তার দ্বারা প্রভাবিত হয়, তপোবিজয় বাবুও ব্যতিক্রম নন ।

উনিশশো নব্বই খ্রিস্টাব্দে তপোবিজয় ঘোষ তাঁর কালচেতনার গল্প বইটির জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বঙ্কিম পুরস্কার লাভ করেন।

চুয়ান্ন বছর বয়সে উনিশশো নব্বই খ্রিস্টাব্দের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ সাতাশে আগস্ট তপোবিজয় ঘোষ মৃত্যুবরণ করেন।

আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।

তারিখঃ- ২৭/৮/২০২১ ইং।

Facebook Comments