শহীদ কাদরী ছিলেন বাংলাদেশী কবি ও লেখক। তিনি উনিশশো সাতচল্লিশ পরবর্তীকালের বাঙালি কবিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য যিনি নাগরিক জীবন সম্পর্কিত শব্দ চয়নের মাধ্যমে বাংলা কবিতায় নাগরিকতা ও আধুনিকতাবোধের সূচনা করেছিলেন।
কলকাতা শহরের পার্ক সার্কাসে উনিশশো বিয়াল্লিশ সালের চৌদ্দই আগস্ট তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি আধুনিক নাগরিক জীবনের প্রাত্যহিক অভিব্যক্তির অভিজ্ঞতাকে কবিতায় রূপ দিয়েছেন। দেশপ্রেম, অসাম্প্রদায়িকতা, বিশ্ববোধ এবং প্রকৃতি ও নগর জীবনের অভিব্যক্তি তার কবিতার ভাষা, ভঙ্গি ও বক্তব্যেকে বৈশিষ্ট্যায়িত করেছে। শহর এবং তার সভ্যতার বিকারকে তিনি ব্যবহার করেছেন তার কাব্যে। তার কবিতায় অনুভূতির গভীরতা, চিন্তার সুক্ষ্ণতা ও রূপগত পরিচর্যার পরিচয় সুস্পষ্ট।
তার প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ চারটি। উনিশশো তেহাত্তর সালে বাংলা কবিতায় অবদানের জন্য তিনি বাংলা একাডেমি পুরস্কার অর্জন করেন। দুইহাজার এগারো সালে ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক লাভ করেন।
এগারো বছর বয়সে উনিশশো তিপান্ন সালে তিনি ‘পরিক্রমা’ শিরোনােম তার প্রথম কবিতা রচনা করেন যা মহিউদ্দিন আহমদ সম্পাদিত ‘স্পন্দন’ কাগজে ছাপা হয়েছিল।
এরপর ‘জলকন্যার জন্য’ শিরোনামে কবিতা লিখেন, এবং একই কাগজে ছাপতে দেন। এভাবে নিয়মিত অনিয়মিতভাবে তার কবিতা লেখা চলতে থাকে।
পঁচিশ বছর বয়সে উনিশশো সাতষট্টি সালে ছাপা হয় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ উত্তরাধিকার। এরপর উনিশশো চুয়াত্তর সালে তোমাকে অভিবাদন প্রিয়তমা, কোথাও কোনো ক্রন্দন নেই এবং প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে রচিত কবিতা নিয়ে দুইহাজার নয় সালে কাব্যগ্রন্থ আমার চুম্বনগুলো পৌঁছে দাও প্রকাশিত হয়।
তার প্রকাশিত গ্রন্থ সংখ্যা চারটি এবং এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত কবিতার সংখ্যা একশো বাইশটি। পরবর্তীতে তিনি আরও চারটি কবিতা লিখেন যার তিনটি ছাপা হয় কালি ও কলম সাহত্যি পত্রিকায় আর একটি প্রথম আলো ঈদ সংখ্যায় এবং সব মিলিয়ে তার কবিতা সংখ্যা একশো ছাব্বিশটি।
দুইহাজার ষোল সালের আজকের এই দিনে অর্থাৎ আঠাশে আগস্ট নিউ ইয়র্কের নর্থ শোর বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চুয়াত্তর বছর বয়সে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তারিখঃ- ২৮/৮/২০২১ ইং।