“যতই করেন বাহাদুরি লাভ হবে না ভাই
সময় থাকতে নিজের সম্পদ চিইনা রাখেন তাই”।।
দীর্ঘ বিরতির পর গত ২৭/৯/১৮ ইং তারিখ রোজ বৃহঃষ্পতিবার কক্সবাজার জেলার কুতুবদিয়া উপজেলার উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাত্রা শুরু করেন প্রান্তিক মানুষের সংস্কৃতি,জীবনধারণের বিভিন্ন দিক তুলে ধরতে প্রচেষ্টারত “লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন “এর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রধান দায়িত্বশীলগণ, যাদের মধ্যে অন্যতম হলেন সংগঠনটির সম্মানিত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব আব্দুল্লাহ আল মারুফ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মানিত সধারণ সম্পাদক Raihan Sumon, কুতুবদিয়া উপজেলা শাখার প্রধান সমন্বয়ক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের মেধাবী ছাত্র মোঃ জোবায়ের হোসেন । উদ্দেশ্য কুতুবদিয়া উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অসংখ্য মেধাবী পরিশ্রমী ছাত্রছাত্রীর মধ্যে লোকজ সংস্কৃতির বিভিন্ন দিক তুলে ধরা ও তার বিকাশ ঘটানো, শুদ্ধ উচ্চারণ, আবৃত্তির বিভিন্ন দিক, গল্প বলার বিভিন্ন ধরণ, পাঠ্যবইয়ের বিভিন্ন নাটিকা ও ছোট গল্প গুলোকে মঞ্চায়ন করতে সচেষ্ট হওয়ার মধ্য দিয়ে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রচেষ্টা চালানোর সাথে সাথে নৈতিক ও সাংস্কৃতিক মানের ইতিবাচক উন্নতি সাধনে কাজ করা।
২৭ তারিখ সংগঠন কুতুবদিয়া উপজেলায় পৌঁছিয়েই একটি সাংগঠনিক মিটিং এ অংশগ্রহণ করেন যেখানে উপস্থিত ছিলেন আই জি ব্যাজ ও দুই বার জাতিসংঘ পদকপ্রাপ্ত কুতুবদিয়া থানার সম্মানিত অফিসার ইনচার্জ জনাব দিদারুল ফেরদৌস স্যার। মিটিং এ সাংগঠনিক কর্মকান্ডের বিভিন্ন বিষয় সহজভাবে জনগণের মধ্যে ফুটিয়ে তোলার বিভিন্ন দিক সমন্ধে আলোকপাত করেন দায়িত্বশীলগণ।
২৮তারিখ রোজ শুক্রবার সারাদিন সংগঠন তাদের কুতুবদিয়া উপজেলার দায়িত্বশীলদের সাথে নিয়ে সাংগঠনিক প্রোগ্রাম পরিচালনা করে, যেখানে উপস্থিত ছিলেন কুতুবদিয়া কলেজ ও স্কুলের বিভিন্ন ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনকারী সক্রিয় দায়িত্ববান সংস্কৃতি কর্মীগণ, যাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন, অর্জন, সালমান, রুহী, মাহি, এনামুল, কুতুবদিয়া কলেজের মেধাবী ছাত্র হীরু সহ আরো অনেকে।
তবে এদিন সকালবেলা লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন এর সকল দায়িত্বশীলবৃন্দ সাংগঠনিক ভাবে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন কুতুবদিয়া উপজেলার সম্মানিত নির্বাহী অফিসার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জনাবা মনোয়ারা বেগম ম্যামের সাথে। এসময়টুকু আরও বেশী সুন্দর হয়ে উঠেছিলো সম্মানিত মেরিন ইঞ্জিনিয়ার জনাব Sohel Iqbal স্যারের উপস্থিতিতে।
যেখানে সংগঠন ম্যাম এবং স্যারের সাথে সংগঠনের বিভিন্ন দিক সমন্ধে আলোচনা করেন।
বিকালবেলা লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন কুতুবদিয়া উপজেলার দায়িত্বশীলগণ সমুদ্রের পাড়ে একসাথে আনন্দঘন সময় অতিবাহিত করেন। এ সময় তারা খেলাধুলা, গান গাওয়া, গল্প করার মধ্যে দিয়ে সুন্দর কিছু মুহূর্ত কাটান এবং সন্ধ্যায় তারা সমুদ্রপাড়ে সাংগঠনিক অাড্ডা এবং সংক্ষিপ্ত একটি ভোজ পর্বের আয়োজন করেন। এসময় সেখানে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত ওসি স্যার এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ার স্যার।
২৯ তারিখ সকালবেলা লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন তাদের ক্লাস পরিচালনা কুতুবদিয়া উপজেলার শিল্পকলা একাডেমীতে যেখানে কিছুসময় লোকজ সংগীত পরিবেশনার পর সংগঠন স্থানীয় দায়িত্বশীলবৃন্দের সাথে এক সাংগঠনিক প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেন যার সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন জনাব Salman Khan এবং প্রোগ্রাম পরিচালনার দায়িত্ব পালন করেন জনাব Abtah Ul Zawad Arjon।
শিল্পকলায় প্রোগ্রাম শেষ করে সংগঠন যাত্রা শুরু করে কুতুবদিয়া সরকারী বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে যেখানে তাদের আগমনের সংবাদে অপেক্ষমান এ প্রতিষ্ঠানের প্রায় শ’খানেক ছাত্রী। সংগঠন এই বিদ্যালয়ের আন্তরিক, পরিশ্রমী, কোমলমতি ছাত্রীদের সাথে ক্লাসের আনন্দগুলো ভাগাভাগি করে প্রায় ১ঃ৩০ ঘন্টা সময় যাবৎ।
বিকালবেলা লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন এর প্রতিনিধি দলটি আবারও এক সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে একত্রিত হন সম্মানিত ইউএনও ম্যামের বাসায় যেখানে নাস্তা গ্রহণ ও সাংগঠনিক আড্ডার পাশাপাশি প্রতিনিধি দলের আগামী সফরের বিষয়টি সমন্ধেও আলোচনা করা হয়। সর্বশেষ সন্ধ্যা ৬ টায় প্রতিনিধি দলটি আবারও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশ্যে তাদের ফিরতি যাত্রা পরিচালনা করে।
সংগঠন গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্বরণ করছে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন এর অন্যতম উপদেষ্টা ফেনী জেলার সম্মানিত ADC Sir জনাব Sujan Chowdhury কে। গভীরভাবে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান উপদেষ্টা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যকলা বিভাগের সম্মানিত শিক্ষক সহযোগী অধ্যাপক জনাবা Kajori Tasmin ম্যাম এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নাট্যকলা বিভাগের সম্মানিত অথিতি শিক্ষক, সংগঠনের সবসময়ের বন্ধু, সবসময়ের শুভাকাঙ্ক্ষী জনাব Mostafa Kamal Jatra স্যারের প্রতি। যাদের অক্লান্ত পরিশ্রম মিশে আছে সংগঠন গড়ে তোলা থেকে শুরু করে আজকের এই অবস্থানে দাঁড়াবার প্রতিটি মূহুর্তের পথচলায়।
সংগঠন স্বপ্ন দেখে সমস্ত অপসংস্কৃতির বিরুদ্ধে, বিজাতীয় সংস্কৃতির বিভিন্ন নেতিবাচকতার বিপরীতে এদেশের নিজস্ব দেশীয় জীবনাচরণের সঠিক দিকগুলোকে ঠিকভাবে তুলে ধরার মধ্য দিয়ে, গ্রামীণ, লোকজ ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রকৃত রস আস্বাদনের মাধ্যমে, দেশের হারিয়ে যাওয়া লোকজ সংস্কৃতির বিভিন্ন আঙ্গিক কে সঠিক ভাবে খুঁজে বের করে সেগুলোকে নিয়মিত চর্চার মাধ্যমে সুস্থ, সুন্দর, রুচিশীল সাংস্কৃতিক পরিবেশ তৈরীর মধ্য দিয়ে একটি সুন্দর সমাজ ব্যবস্থার বিনির্মাণ করার।
এই স্বপ্ন পূরণের লক্ষেই তাদের এই নিরন্তর ছুটে চলা। ছুটে চলা এক সুন্দর পৃথিবী নির্মাণে অংশগ্রহণের প্রত্যয়ে।
লেখকঃ-
আব্দুল্লাহ আল মারুফ
(প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি, লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন)