কালীপ্রসন্ন ঘোষ ছিলেন একজন বাঙালী সাহিত্যিক। তিনি ছিলেন একাধারে লেখক, সাংবাদিক ও বাগ্মী।
আঠারোশো তেতাল্লিশ সালের তেইশে জুলাই ঢাকা বিভাগের বিক্রমপুরের ভরাকর গ্রামে তার জন্ম।বাল্যকালেই তিনি সংস্কৃত, ফারসি ও বাংলা ভাষায় পারদর্শিতা অর্জন করেন। পরে ইংরেজি ভাষাও আয়ত্ত করেন।
বাল্যকাল থেকেই তিনি বাগ্মিতার পরিচয় দেন। মাত্র বিশ বছর তখন তিনি কলকাতার ভবানীপুরে খ্রিস্টধর্ম সম্পর্কে এক বক্তৃতা দিয়ে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রমুখ মনীষীর প্রশংসা অর্জন করেছিলেন। এরপর থেকেই ব্রাহ্ম সমাজের সঙ্গে তার একটা যোগসূত্র স্থাপিত হয় এবং পরবর্তীতে তিনি ব্রাহ্মসমাজে যোগদান করেন।
কালীপ্রসন্ন মূলত দর্শন ও সমাজ সম্পর্কে লিখেছেন। তার লেখা উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধের মধ্যে রয়েছে প্রভাত-চিন্তা, নিভৃত-চিন্তা, নারীজাতিবিষয়ক প্রস্তাব, নিশীথ-চিন্তা প্রভৃতি।
উল্লেখযোগ্য গ্রন্থের মধ্যে রয়েছে ভ্রান্তিবিনোদ, প্রমোদলহরী, ভক্তির জয়, মা না মহাশক্তি, জানকীর অগ্নিপরীক্ষা, ছায়াদর্শন প্রভৃতি।
এ ছাড়া “সঙ্গীতমঞ্জরী” নামে একখানা আধ্যাত্মিক সঙ্গীতসংগ্রহ এবং “কোমল কবিতা” নামে একখানা শিশুপাঠ্য গ্রন্থও তিনি রচনা করেন।
কালীপ্রসন্নের রচনারীতি বিদ্যাসাগর, বঙ্কিমচন্দ্র এবং ইংরেজ পণ্ডিত কার্লাইলের দ্বারা অনেকাংশে প্রভাবিত। তার রচনাসমূহ ভাবগাম্ভীর্য, ইতিহাসচেতনা ও গভীর জীবনবোধেপূর্ণ।
ইংরেজ সরকার তাকে পান্ডিত্যের স্বীকৃতিস্বরূপ আঠারোশল সাতানব্বই সালে “রায়বাহাদুর” এবং উনিশশো নয় সালে “সিআইই” উপাধি প্রদান করে। বাংলার পণ্ডিতগণ তাকে “বিদ্যাসাগর” উপাধিতে অভিষিক্ত করেন।
উনিশশো দশ সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ উনত্রিশে অক্টোবর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তারিখঃ- ২৯/১০/২০২১ ইং।