কবির বকুল হচ্ছেন বাংলাদেশের একজন বিশিষ্ট গীতিকার। এছাড়া তিনি সাংবাদিক হিসেবেও কাজ করছেন। সেরা গীতিকার হিসেবে তিনি দুইহাজার আট, দুইহাজার নয়, দুইহাজার দশ, দুইহাজার তেরো ও দুইহাজার আঠারো সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।
কবির বকুল উনিশশো ছেষট্টি সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ একুশে নভেম্বর চাঁদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি উনিশশো ছিয়াশি সাল থেকে কবিতা, গান লেখালেখির সাথে জড়িত। উনিশশো অষ্টাশি সালে তিনি প্রথম তেরোটি গান লিখে শিল্পী তপন চৌধুরীকে দেন। সেখান থেকে দুটি গান দুটি অ্যালবামে আসে। প্রথম গান ছিল ‘কাল সারা রাত তোমারই কাকন যেন মনে মনে রিনিঝিনি বেজেছে’ যার গায়ক ছিলেন শিল্পী আইয়ুব বাচ্চু। দ্বিতীয় গানটি ছিলো ‘পথে যেতে যেতে খুঁজেছি তোমায়’ যার গায়ক ছিলেন শিল্পী নাসিম আলী খান। এখন পর্যন্ত তিনি আট শতাধিক ছায়াছবির গান লিখেছেন এবং সবমিলিয়ে প্রায় পাঁচ হাজারের বেশি গান লিখেছেন।
তিনি উনিশশো চুরানব্বই সালে অগ্নি সন্তান চলচ্চিত্রে প্রথম গান লেখেন। এ গানের জন্য বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির পুরস্কার শ্রেষ্ঠ গীতিকারের মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
তার উল্লেখযোগ্য গানগুলোর মধ্যে রয়েছে যায় দিন যায় একাকী, কেউ প্রেম করে কেউ প্রেমে পড়ে, আমার মাঝে নেই এখন আমি, দুঃখটাকে দিলাম ছুটি, আসবার কালে আসলাম একা, আকাশ ছুঁয়েছে মাটিকে, এত ভালোবেসো না আমায়, লাজুক পাতার মত লজ্জাবতী, তোমারে দেখিলো পরানো ভরিয়া, একটা চাঁদ ছাড়া রাত আঁধার কালো, কই গেলা নিঠুর বন্ধু রে, জল পড়ে পাতা নড়ে, নয়নও ঘুরাইয়া খুঁজি তোমারে তোমারে, ও প্রিয় আমি তোমার হতে চাই, আমি নিঃস্ব হয়ে যাব জানো না, বলো না কেন ওই আকাশ নেমে আসে, এক কাপ চা, প্রেমে পড়েছে মন প্রেমে পড়েছে, গভীরে আরও গভীরে, হও যদি ওই নীল আকাশ, টুকরো টুকরো করে দেখো, এই হৃদয়ের সাদা কাগজে, প্রিয়া আমার প্রিয়া, দিল দিল দিল, বুবলি বুবলি, লাভ ম্যারেজ, আকাশ ছোঁয়া ভালোবাসা, এক মুঠো প্রেম যদি দাও, নাম্বার ওয়ান শাকিব খান, ভালোবাসা হয়ে যায়, আঙুল ছুঁয়েছে আঙুল তোমার, বধু বেশে কন্যা যখন এলো রে, যদি থেমে যায় পৃথিবীর সব কোলাহল, প্রেমী ও প্রেমী, সূর্য ডুবে গেলে সব অন্ধকার, তুই কি আমার হবি রে, বুক চিনচিন করছে হায়, তুমি ছাড়া একদিন, খন্ড বিখন্ড প্রেম, আইতে দেখি যাইতে দেখি, দিনেতে সূর্য ভালো চাঁন্দেরই আলো না, তুমি আমার জীবন (বীর)।
উল্লেখযোগ্য অ্যালবামের গানসমূহের মধ্যে রয়েছে কেন এই নিঃসঙ্গতা, ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর, কালো মাইয়া কালো বইলা, পৃথিবীর মত হৃদয়টাকে, প্রিয়ার মনের কথা বিধাতা জানে, দেখলে তোমায় মনটা আমার চমকে যায়, ফুল যত সুন্দর হয় না কেন, ভাবতে পারি না, তোমাকে দেখলেই মৌনতা ভুলে যাই, চন্দ্রিমা রাত্রিতে কিংশুক সৌরভে, আমার এক নয়ন তো দেখে নারে, রমনার বটমুলে কথা হবে প্রাণ খুলে, বাজে রে বাজে ঢোল আর ঢাক, আকাশের বুক থেকে কিছুটা নীল এনে, যদি ভুল করে কাছে এসে থাকি (অনুশোচনা), তুমি মেঘ দেখেছো তুমি ঝড় দেখেছো, তোমার পথ আমার পথ ভিন্ন হতে পারে (রুনা লায়লা সাবিনা ইয়াসমীন), যে আকাশ তার সবুজ ভুমির দিকে তাকিয়ে সম্ভাবনার কথা বলে, এখনো হয় ভোর শিশির ছড়ায় ঘাসে’
চাঁদ তারা নদী ফুল আকাশ বলো, তুমি হৃদয়ের আয়না (কনা–ইমরান) প্রভৃতি।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ছাড়াও কবির বুকল অর্জন করেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) পুরস্কার, বাংলাদেশ প্রযোজক সমিতি পুরস্কার, বিনোদন বিচিত্রা পুরস্কার, সিটিসেল চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস, ঢালিউড অ্যাওয়ার্ড, নিউইয়র্ক, চ্যানেল এস (যুক্তরাজ্য) অ্যাওয়ার্ড, রোটারি ক্লাব, চাঁদপুর আজীবন সম্মাননা, টেলিভিশন রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ট্রাব) পুরস্কার সেরা গীতিকার, সিনে জার্নালিষ্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (সিজেএফবি) অ্যাওয়ার্ড।
আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি অজস্র ভালোবাসা।
তারিখঃ- ২১/১১/২০২১ ইং।