রাজিয়া খান ছিলেন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সাহিত্যিক। লেখালেখি ছাড়াও তিনি দীর্ঘদিন মঞ্চে অভিনয় করেছেন। তার পুরো নাম রাজিয়া খান আমিন হলেও তিনি রাজিয়া খান নামে লেখক হিসেবে পরিচিত।
রাজিয়া খান উনিশশো ছত্রিশ সালের ষোলোই ফেব্রুয়ারি ফরিদপুর জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম তমিজউদ্দিন খান যিনি অবিভক্ত বাংলার মন্ত্রী, আইন সভার সদস্য এবং জাতীয় পরিষদের স্পীকার ছিলেন।
পঞ্চাশ দশকে সাহিত্য ও সংস্কৃতির অনুরাগী ও প্রগতিবাদী লেখিকা হিসেবে লেখালেখি করেছেন রাজিয়া খান। তার প্রথম সৃজনশীলতার ঝোঁক প্রকাশিত হয় ছন্দে।
আর পনেরো বছর বয়সেই পুরোদস্তুর উপন্যাস লিখতে শুরু করেন তিনি, আর আঠারো বছর বয়সেই লেখা হয়ে যায় ‘বট তলার উপন্যাস’। তার লেখা ‘বটতলার উপন্যাস’ প্রচুর জনপ্রিয়তা পায়।
এতে দেশভাগজনিত সংকট এবং উপমহাদেশের বিশাল ভৌগোলিক পরিসরে চরিত্রপাত্রের জটিল সমস্যার বিন্যাস দেখানো হয়েছে। তিনি খুব বেশি লিখে গিয়েছেন তেমন নয়, কিন্তু যা লিখে গেছেন তাতে জটিলায়তন নগরজীবন অন্তর্গত ব্যক্তিমানুষের নৈঃসঙ্গ, বিচ্ছিন্নতা ও আত্মরক্তক্ষরণের শিল্পরূপায়ন করেছেন।
তার মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস ‘দ্রৌপদী’ এপার ওপার দুই বাংলায় বেশ সমাদৃত।
তার উল্লেখযোগ্য সৃষ্টি সমূহের মধ্যে রয়েছে বটতলার উপন্যাস, অনকল্প, প্রতিচিত্র, চিত্রকাব্য, হে মহাজীবন, দ্রৌপদী, পাদবিক প্রভৃতি।
তার অন্যান্য বই সম্পাদনার মধ্যে রয়েছে Argus under Anaesthesia, cruel April, সোনালী ঘাসের দেশ, নোংরা নাটক: তিনটি একাঙ্কিকা আবর্ত, তমিজুদ্দিন খানের আত্মকথা, Multi Dimensional vision in George Eliot, A Different spring, জহির রায়হানের ‘আরেক ফাল্গুন’ উপন্যাসের ইংরেজি অনুবাদ প্রভৃতি।
তিনি অর্জন করেছেন অসংখ্য সম্মাননা। তার মধ্যে রয়েছে বাংলা একাডেমী পুরস্কার, একুশে পদক, অনন্যা পদক, শিল্পকলা একাডেমী পদক, পি.ই.এন. পুরস্কার প্রভৃতি।
দুইহাজার এগারো সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ আঠাশে ডিসেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তারিখঃ- ২৮/১২/২০২১ ইং।