প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী এবং সাহিত্যিক ড. কাজী মোতাহার হোসেনের মৃত্যুবার্ষিকী আজ

ড. কাজী মোতাহার হোসেন বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত শিক্ষাবিদ, পরিসংখ্যানবিদ, বিজ্ঞানী এবং সাহিত্যিক।

তার পৈতৃক বাড়ি ফরিদপুর জেলার পাংশা উপজেলার বাগমারা গ্রামে। তবে তার জন্ম কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামে তাঁর মামাবাড়িতে আঠারোশো সাতানব্বই সালের ত্রিশে জুলাই।

তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে এমএ ডিগ্রি অর্জন করেন এবং উনিশশো একান্ন সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরিসংখ্যানে পিএইচডি করেন।

উনিশশো তেইশ সাল থেকে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং উনিশশো চুয়ান্ন সালে অধ্যাপক হন। উনিশশো উনসত্তর সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তাকে অনারারী (Professor Emeritus) অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়।

অসাম্প্রদায়িক ধ্যান-ধারণায় বিশ্বাসী এবং সেই আলোকে দেশের শিক্ষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির সুদৃঢ় ভিত গড়ে তোলার জন্য তিনি লেখনী পরিচালনা করেন। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার পক্ষে বিভিন্ন কর্মকান্ডের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। শিক্ষার সর্বস্তরে বাংলা ভাষা চালুর দাবীতে পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পূর্ব বাংলায় যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল তিনি ছিলেন তার একজন দৃঢ় পৃষ্ঠপোষক। বক্তৃতা, বিবৃতি ও প্রবন্ধাদি প্রকাশ করে এ-সব আন্দোলনে গতিদান করেন।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের ৬-দফাকে কেন্দ্র করে ষাটের দশকে পূর্ব বাংলায় বাঙালি জাতিসত্তা বিকাশের যে আন্দোলন সংঘটিত হয় তারও একজন বলিষ্ঠ সমর্থক ছিলেন কাজী মোতাহার।

উনিশশো একষট্টি সালে প্রতিক্রিয়াশীল বুদ্ধিজীবীদের বিরোধিতার মুখে ঢাকায় রবীন্দ্র-জন্মশত বার্ষিকী পালনে সাহসী ভূমিকা পালন করেন তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান, সাহিত্য, সংস্কৃতির উপর অনেক বই ও প্রবন্ধ লিখেছেন। তার লেখা বইগুলোর মধ্যে সঞ্চয়ন (প্রবন্ধ সংকলন), নজরুল কাব্য পরিচিতি, সেই পথ লক্ষ্য করে, সিম্পোজিয়াম, গণিত শাস্ত্রের ইতিহাস, আলোক বিজ্ঞান, নির্বাচিত প্রবন্ধ, প্লেটোর সিম্পোজিয়াম অন্যতম।

উনিশশো ছেষট্টি সালে প্রবন্ধসাহিত্যের জন্য বাংলা একাডেমি পুরস্কার এবং বিজ্ঞান চর্চায় অসাধারণ অবদানের জন্য উনিশশো উনআশি সালে “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয়। ড. কাজী মোতাহার হোসেনকে একজন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দাবাড়ু হিসেবে বাংলাদেশে দাবা খেলার পথিকৃৎ হিসেবে সম্মানিত করা হয়।

উনিশশো একাশি সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ নয় অক্টোবর তিনি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।

আজ তার মৃত্যুবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।

তারিখঃ- ৯/১০/২০২১ ইং।

Facebook Comments