‘ফিশ ওম্যান’ হচ্ছে তার একটি উল্লেখযোগ্য নিরীক্ষাধর্মী চিত্রকর্ম। তিনি মূর্ত ও বিমূর্ত দু-ধারায়ই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে গেছেন।
বলছি একুশে পদকপ্রাপ্ত বিশিষ্ট বাংলাদেশী চিত্রশিল্পী এবং চারুকলা বিষয়ের শিক্ষক জনাব কাজী আবদুল বাসেতের কথা।
তিনি ঢাকায় উনিশশো পঁয়ত্রিশ সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ চৌঠা ডিসেম্বর জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
উনিশশো ছাপান্ন সালে তিনি ঢাকার সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউট থেকে চারুকলা বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।
তিনি তার নিজের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা সরকারি আর্ট ইনস্টিটিউটে লেকচারার পদে যোগদান করেন উনিশশো সাতান্ন সালে।
এই ইনস্টিটিউটে শিক্ষাদানকালে তিনি ফুলব্রাইট ফেলোশিপ লাভ করেন এবং চিত্রশিল্পে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ট ইনস্টিটিউট পড়তে যান।
উনিশশো পঁয়ষট্টি সালে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরে এসে ড্রয়িং ও পেইন্টিং বিভাগের প্রধান হিসেবে যোগ দেন এবং উনিশশো পঁচানব্বই সালে তিনি এই প্রতিষ্ঠান থেকে অবসরে যান।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রে শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারায় প্রভাবিত হন। সেখানে তিনি পল উইগার্ড, হ্যান্স হফম্যান এবং বাবভিক্টকে তার শিক্ষক হিসেবে পেয়েছিলেন।
দেশে ফিরে এসে তিনি বিমূর্ত প্রকাশবাদী ধারার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেন।
উনিশশো চুরাশি পরবর্তী সময়ে তিনি বাস্তবধর্মী চিত্র রচনায়ও মনোযোগ দেন।
নারী-প্রতিকৃতি, বিশেষ করে, নারীর মাতৃরূপ অঙ্কনে তার বিশেষ আগ্রহ ছিল। তিনি প্যাস্টেল রঙে যুদ্ধ শেষে প্রিয় সন্তানের জন্য অপেক্ষা করে আছেন মা এবং প্রিয় স্বামীর জন্য অপেক্ষা করে আছেন স্ত্রী এ ধরনের কিছু কাজ করেন।
তিনি নিখিল পাকিস্তান চারুকলা প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করে পুরস্কার লাভ করেন। উনিশশো সাতান্ন সালে করাচীতে অনুষ্ঠিত পাকিস্তান জাতীয় চারুকলা প্রদর্শনী থেকে দ্বিতীয় পুরস্কার লাভ করেন।
উনিশশো বিরাশি সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, উনিশশো সপ্তাশী সালে শ্রীজ্ঞান অতীশ দীপঙ্কর স্বর্ণ পদক এবং উনিশশো উননব্বই সালে বাংলাদেশ চারুকলা সংসদ পুরস্কার লাভ করেন।
চারুকলায় সামগ্রিক অবদানের জন্য উনিশশো একানব্বই সালে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জাতীয় সম্মাননা একুশে পদক লাভ করেন।
তিনি দুইহাজার দুই সালের তেইশে মে ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তারিখঃ- ৪/১২/২০২১ ইং।