শিশুসাহিত্যিক কার্তিকচন্দ্র দাশগুপ্তের জন্মবার্ষিকী আজ

রাইচরনের খুড়ি
ষাট বছরের বুড়ি ,
আমড়া তলায় বসে চিবায়
ফুটকড়াই আর মুড়ি ।
ফোকলা দাঁতে হেসেই খুন,
গায় দিলে সুড়সুড়ি।

কবিতাঃ- রাইচরনের খুড়ি
(কার্তিকচন্দ্র দাশগুপ্ত)

শিল্পে সাহিত্যে বিশেষত শিশুসাহিত্যে যার অবদান ছিলো অনস্বীকার্য; বিশেষত সাবিত্রী, তাই তাই, ফুলঝুরি, চরকাবুড়ি, তেপান্তরের মাঠ, তে-রাত্তিরের, তাইরে নাইরে না, এ বেলা ওবেলার গল্প, য়্যাং-ব্যাং, ঝলমল ইত্যাদি শিশুসাহিত্যগুলো সত্যি বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য স্থান দখল করে রেখেছে।

বলছি মিল্টনের Lycidas যিনি বাংলায় অনুবাদ করেন সেই গুণীজন কার্তিকচন্দ্র দাশগুপ্তের কথা।

তাঁর রচিত কাব্যগ্রন্থগুলির মধ্যে রয়েছে আমার দেশ,পূজা পাঠ্যপুস্তকেও তাঁর লেখা স্থান করে নিয়েছে যার মধ্যে অন্যতম ইতিহাসের পড়া,ভূ-পরিচয়। এছাড়াও তাঁর অন্যান্য গ্রন্থের মধ্যে অনন্য মালঞ্চের ফুল,বিষের হাওয়া, হিমালয়ের হিমতীর্থে ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

কার্তিকচন্দ্র দাশগুপ্ত জন্মগ্রহণ করেন আঠারোশো চুরাশি সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ ছয় আগষ্ট বর্তমান বাংলাদেশের বরিশালের ফুল্লশ্রী গ্রামে। পিতা মহেশচন্দ্র দাশগুপ্ত ছিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক ও নাট্যকার।

কুচবিহার কলেজ থেকে বি.এ. পাশের পর আইন পড়তে থাকেন, কিন্তু শেষ না করেই তৎকালীন জাতীয় দৈনিক নবশক্তি পত্রিকার সম্পাদকীয় বিভাগে যোগ দেন।

তারপর একই সঙ্গে দেবালয় প্রতিষ্ঠানের ও দেবালয় মাসিক পত্রের সম্পাদকের কাজ করেন। কিছুকাল বিশ্বকোষ এর লেখকগোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।

এক সময় ‘বার্ষিক শিশুসাথী’ সম্পাদনার ভার তাঁর উপর ন্যস্ত ছিল। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসের সুপারিনটেন্ডন্ট হিসাবেও কাজ করেছেন। পরে ইউনিভার্সিটির অফিস সুপারিনটেন্ডন্ট ও কয়েকবার সাময়িক ভাবে সহকারী রেজিস্ট্রারের কাজ করে অবসর নেন। সাহিত্যক্ষেত্রে শিশু সাহিত্য রচনার জন্য প্রতিষ্ঠা লাভ করেন।

কার্তিকচন্দ্র দাশগুপ্ত একাশি বৎসর বয়সে উনিশশো পঁয়ষট্টি খ্রিস্টাব্দের সাতাশে ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন।

লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন এর সকল সদস্য দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে শিশু সাহিত্যিক কার্তিকচন্দ্র দাশগুপ্তের জন্মবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।

তারিখ:- ৬/০৮/২০২১ ইং।

Facebook Comments