শাহনাজ রহমতুল্লাহ ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাংলাদেশী সংগীত শিল্পী। তিনি দেশাত্মবোধক গান গেয়ে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য গানসমূহের মধ্যে রয়েছে এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল্, প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ, আমায় যদি প্রশ্ন করে, যে ছিল দৃষ্টির সীমানায়।
প্রথমোক্ত তিনটি গান অর্থাৎ এক নদী রক্ত পেরিয়ে, একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়ে, একতারা তুই দেশের কথা বলরে এবার বল্, বিবিসির একটি জরিপে সর্বকালের সেরা বিশটি বাংলা গানের তালিকায় স্থান পায়।
শাহনাজ বেগম উনিশশো বায়ান্ন সালের দোসরা জানুয়ারি ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন।
উনিশশো তেষট্টি সালে মাত্র দশ বছর বয়সে ‘নতুন সুর’ নামক চলচ্চিত্রে কণ্ঠ দেওয়ার মাধ্যমে তাঁর কর্মজীবন শুরু হয়।
তাঁর এক বছর পর অর্থাৎ উনিশশো চৌষট্টি সালে প্রথম টেলিভিশনে তাঁর গাওয়া গান প্রচারিত হয়। তিনি গাজী মাজহারুল আনোয়ার, আলাউদ্দিন আলী, খান আতা প্রমুখের সুরে গান গেয়েছেন। পাকিস্তানে থাকার সুবাদে করাচী টিভিসহ উর্দু ছবিতেও গান করেছেন।
প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ গানে কণ্ঠ দেন তিনি।
শাহনাজ রহমতুল্লাহর চারটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয়েছে।তার গাওয়া উল্লেখযোগ্য গানসমূহের মধ্যে রয়েছে,একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়,প্রথম বাংলাদেশ আমার শেষ বাংলাদেশ,এক নদী রক্ত পেরিয়ে,আমার দেশের মাটির গন্ধে,একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল,আমায় যদি প্রশ্ন করে,কে যেন সোনার কাঠি,মানিক সে তো মানিক নয়,যদি চোখের দৃষ্টি,
সাগরের তীর থেকে,খোলা জানালা,পারি না ভুলে যেতে,ফুলের কানে ভ্রমর এসে,আমি তো আমার গল্প বলেছি,আরও কিছু দাও না,একটি কুসুম তুলে নিয়েছি,ক্ষণিকের ভালো লাগা মনেতে দোলা দিয়ে
এই জীবনের মঞ্চে মোরা কেউবা কাঁদি কেউবা হাসি ইত্যাদি।
শাহনাজ রহমতুল্লাহ ব্যক্তিগত জীবনে উনিশশো তিয়াত্তর সালে আবুল বাশার রহমতুল্লাহর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির এক কন্যা ও এক পুত্র রয়েছে, তারা হলেন নাহিদ রহমতউল্লাহ এবং একেএম সায়েফ রহমতউল্লাহ।
তিনি উনিশশো নব্বই সালে ছুটির ফাঁদে চলচ্চিত্রের জন্য শ্রেষ্ঠ নারী কণ্ঠশিল্পী হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। এবং তার দুই বছর পরে অর্থাৎ উনিশশো বিরানব্বই সালে
একুশে পদক অর্জন করেন।
এছাড়াও তিনিবাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার এবং বাচসাস পুরস্কারও অর্জন করেন।
রহমতুল্লাহ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন মাত্র সাতষট্টি বছর বয়সে দুইহাজার উনিশ সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ ২৩ মার্চ ঢাকার বারিধারায় নিজ বাড়িতে।
লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠনের সকল সদস্য দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে প্রিয় সংগীত শিল্পীর মৃত্যুবার্ষিকীতে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা এবং অজস্র ভালোবাসা।
তারিখ:- ২৩/০৩/২০২১ ইংরেজি