সমাজের নানা অসঙ্গতি লেখনীর মাধ্যমে তুলে ধরার ক্ষেত্রে সর্বদাই যিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে গেছেন তিনি ছিলেন আমাদের সকলের অতি প্রিয় লেখক অতি প্রিয় ঔপন্যাসিক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়।
বাংলা ভাষায় যে কয়েকটি কালজয়ী উপন্যাস সর্বাধিক বার পঠিত হয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান একটি হচ্ছে তার সৃষ্ট “পথের দাবি” উপন্যাসটি।
বৃটিশ শাসিত সময়টিতে পরাধীনতার শেকল ভেঙে এক নতুন জাগ্রত সমাজ তৈরির স্বপ্ন দেখেছিলেন শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। তার প্রতিচ্ছবিই আমরা পাই পথের দাবী উপন্যাসটির মধ্যে। সব্যসাচী চরিত্রটি সেই চিত্রই বহন করে। সব ভেঙেচুরে নতুন স্বাধীন সমাজ গড়ে তোলার প্রত্যয় ফুটে উঠেছে তার সংকল্পে।
“মানুষের চামড়ার রঙ ত তার মনুষ্যত্ব মাপকাঠি নয়। কোণ একটা বিশেষ দেশে জন্মানোই ত তার অপরাধ হতে পারে না!…ধর্মমত ভিন্ন হলেই কি মানুষে হীন প্রতিপন্ন হবে? এ কোথাকার বিচার!”
কিংবা
“সত্য পালনের দুঃখ আছে, তাকে আঘাতের মধ্য দিয়ে বরঞ্চ একদিন পাওয়া যেতে পাড়ে কিন্তু বঞ্চনা প্রতারণার মিষ্ট পথ দিয়ে সে কোনদিন আনাগোনা করে না”।
এই অসাধারণ উক্তিগুলো আমরা পেয়ে থাকি শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের “পথের দাবী” উপন্যাসটির মধ্যে। তবে শাসকদের রোষানলে পড়ে উনিশশো সাতাশ সালের আজকের এই দিনে অর্থাৎ চৌঠা জানুয়ারি পথের দাবীকে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
তখন অনেকেই শরৎচন্দ্রকে বইয়ের কিছু কিছু ক্ষেত্রে পরিবর্তনের কথা বললে তিনি বলেন যে এক শব্দও পরিবর্তন তিনি করবেন না।
আসলেই সত্যের শক্তি তার আপন মহিমায় মহিমান্বিত। আর তাইতো একটি শব্দের পরিবর্তন ছাড়াই উপন্যাসটি এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়েও শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ করে যাচ্ছে।
তারিখঃ- ৪/১/২০২১ ইং।