জয় বাংলা বাংলার জয়, সালাম সালাম হাজার সালাম, ওরে নীল দরিয়া, তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়-সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের গায়ক ছিলেন আব্দুল জব্বার।
কুষ্টিয়া জেলায় উনিশশো আটত্রিশ সালের আজকের এই দিনটিতে অর্থাৎ দশই ফেব্রুয়ারী তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় কাঁধে হারমোনিয়াম ঝুলিয়ে কলকাতার বিভিন্ন ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের গান গেয়ে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন শিল্পী জব্বার। স্বাধীন-বাংলা বেতার কেন্দ্রে গেয়েছেন অসংখ্য গান।
মানুষের অধিকার আদায়ের গান গাইতে গাইতেই বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামালার আসামিও হতে হয়েছিল আব্দুল জব্বারকে।
জাতির পিতা আগরতলা মামলা থেকে রেহাই পেয়ে যে কয়জন মানুষের খোঁজ করেছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন ছিলেন ‘গান পাগলা’ আবদুল জব্বার।
তাঁকে দেখলেই বঙ্গবন্ধু বুকে জড়িয়ে নিতেন। দেশপ্রেমী এই শিল্পীকে এতোটাই পছন্দ করতেন বঙ্গবন্ধু। এমন একজন শিল্পীর কণ্ঠেই মানায়-
‘শোন একটি মুজিবরের থেকে লক্ষ মুজিবরের কণ্ঠস্বরের ধ্বনি’,
‘মুজিব বাইয়া যাও রে, অকূল দরিয়ায়’,
‘সাত কোটি মানুষের একটাই নাম, মুজিবর’,
‘যদি রাত পোহালে শোনা যেত বঙ্গবন্ধু মরে নাই’!
আব্দুল জব্বার মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতের বিভিন্ন স্থানে গণসংগীত গেয়ে প্রাপ্ত বারো লক্ষ টাকা তিনি স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের ত্রাণ তহবিলে দান করেছিলেন।
উনিশশো একাত্তর সালে মুম্বাইয়ে ভারতের প্রখ্যাত কণ্ঠশিল্পী হেমন্ত মুখোপাধ্যায়কে সঙ্গে নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য জনমত তৈরিতেও নিরলসভাবে কাজ করেন তিনি। অসংখ্য কালজয়ী গানে কন্ঠও দেন আব্দুল জব্বার।
দুইহাজার ছয় সালে বিবিসি বাংলার শ্রোতাদের জরিপে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ কুড়িটি বাংলা গানের তালিকায় আব্দুল জব্বারের তিনটি গান স্থান পায়।
এ গানগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে – তুমি কি দেখেছ কভু জীবনের পরাজয়, সালাম সালাম হাজার সালাম।
সংগীতে অবদানের জন্য উনিশশো আশি সালে তাকে একুশে পদক এবং উনিশশো ছিয়ানব্বই সালে স্বাধীনতা পদক দেয়া হয়।
দুইহাজার সতেরো সালের ত্রিশে আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
আজ তার জন্মবার্ষিকীতে লোকজ সাংস্কৃতিক সংগঠন এর সকল সদস্য, দায়িত্বশীল এবং শুভাকাঙ্ক্ষীবৃন্দের পক্ষ থেকে জানাচ্ছি অজস্র ভালোবাসা এবং বিনম্র শ্রদ্ধা।
তারিখঃ- ১০/২/২০২১ ইং।